বয়োঃসন্ধিকালে মেয়েদের  শারিরীক পরিবর্তন:-


Topic:-

1. বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন।
2. বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের কি কি সমস্যা হতে পারে।
3. বয়সন্ধিকালে ছেলেদের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন। 
4. বয়সন্ধিকালে ছেলে এবং মেয়েদের করনীয়।
5. বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের শারিরীক পরিবর্তন,  বিভিন্ন সমস্যা ও তার সমাধান।

বয়োঃসন্ধি হচ্ছে জীবনবিকাশের এমন একটি পর্যায়, যখন যৌন-অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পরিপক্বতা অর্জন করে এবং ব্যাক্তির মধ্যে সন্তান উৎপাদন ক্ষমতা জন্মে।
সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে,বয়োসঃন্ধি হচ্ছে মেয়েদের ক্ষেত্রে ডিম্বকষের তথা জরায়ুসহ অন্যান্য অঙ্গসমূহের বৃদ্ধি।যৌন পরিপক্বতা শুরু হওয়ার সাথে সাথে উচ্চতা ও ওজনের দ্রুত বৃদ্ধি ঘটে।মেয়েদের ক্ষেত্রে ১১-১৫ বছর বয়স বয়োঃসন্ধি কালের অন্তর্ভুক্ত। মেয়েদের ক্ষেত্রে এই সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসময় বিভিন্ন শারিরীক ও মানসিক পরিবর্তন আসে।এই পরিবর্তনে যেন কিশোরী মানিয়ে নিতে পারে তাই আমাদের এই বিষয় এ জানা উচিত।





বয়োঃসন্ধি কালে মেয়েদের যে সকল পরিবর্তন লক্ষ করা যায়-

https://rupokit.blogspot.com/

১.শারিরীক পরিবর্তন:

(i) স্তন বৃদ্ধি পায়,গুপ্তস্থানে লোম ওঠা,ঋতুস্রাব শুরু,ও অন্যান্য লোমের বৃদ্ধি হয়।

(ii)পিটুইটারি গ্রন্থি হতে অনেক হরমোন ক্ষরিত হয়। বয়োঃসন্ধিকালে গোনাডোট্রাপিক হরমোনের পরিমাণ ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায় যৌন গ্রন্থির তৎপরতা বেড়ে যায় বলে যৌন পরিবর্তন শুরু হয়।

(iii)পিটুইটারি গ্রন্থি নিঃসৃত গোনাডোট্রপিক হরমোন যৌন গ্রন্থি নিঃসৃত হরমোনকে উদ্দীপিত করে আবার যৌন গ্রন্থি নিঃসৃত হরমোন পিটুইটারি গ্রন্থিতে উৎপন্ন হরমোনের উপর প্রভাব বিস্তার করে।

(iv) বয়োঃসন্ধিকালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হয় সন্তান উৎপাদনকারী ব্যাবস্থা ও অন্যান্য যৌন অঙ্গের। মেয়দের এ সময়ে ডিম্বকোষের বৃদ্ধি হয়। এ ডিম্বকোষে সন্তান উৎপাদনকারী ডিম্ব তৈরি হয়।

২. মানসিক ও আচরণের পরিবর্তন:

(i)অসামাঞ্জস্যপূর্ণ আচরণ:
বয়োঃসন্ধিকালে ছেলে মেয়েদের দেহের দ্রুত বিকাশের জন্য আচরণ বিশৃক্মখলাময় ও অদ্ভুত মনে হয়।

(ii)একা থাকার ইচ্ছা:
এ সময়ে ছেলে-মেয়েরা সবার সাথে মেলামেশা করতে চায় না, একা থাকতে চায়। এ সময় বিভিন্ন কাজকর্ম ও খেলাধুলা করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে। সকলে তাদের সাথে খারাপ ব্যাবহার করছে, তাদের ভুলভাবে বিচার করছে এ সম্পর্কে তারা প্রায় সময়ই চিন্তা-ভাবনা করে।

(iii)একঘেয়েমি:
এ সময়ে ছেলে-মেয়েরা একঘেয়ে হয়ে যায়। ছোটবেলার মতো খেলাধুলা, স্কুলের কাজ এবং সামাজিক বিভিন্ন কাজে আনন্দ পায় না।

(iv)আবেগের আধিক্য :
বয়োঃসন্ধিকালে অভিমান, ভাবপ্রবণতা, রাগে ফেটে পড়া, সামান্য কারণেই কেঁদে ফেলা ইত্যাদির ফলে তাদের মধ্যে উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা, ও অস্থিরতা বাসা বাঁধে। তাছাড়া মাসিক শুরু হলে মেয়েরা অস্থিরতা ও বিষন্নতায় ভোগে এবং কারোর কথা না শোনার মনোভাব দেখায়।

(v)সামাজিক বৈরতা:
মেয়েরা এই সময় কারো সাথে একমত পোষ্ণ করতে চায় না, প্রতিদ্বন্দিতার মনোভাব, সমালোচনামুখর হয়ে ওঠে।

(vi)অতিরিক্ত লজ্জা :
এ সময়ে যৌন বৈশিষ্ট দেখতে পেয়ে অন্য ব্যাক্তি বিরুপ মন্তব্য করতে পারে ভেবে এরা লাজুক হয়ে যায়। অতিরিক্ত যৌন পরিবর্তনের কারণেই এরা ভীত হয়ে পড়ে।

(ii)একা থাকার ইচ্ছা:
এ সময়ে ছেলে-মেয়েরা সবার সাথে মেলামেশা করতে চায় না, একা থাকতে চায়। এ সময় বিভিন্ন কাজকর্ম ও খেলাধুলা করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে। সকলে তাদের সাথে খারাপ ব্যাবহার করছে, তাদের ভুলভাবে বিচার করছে এ সম্পর্কে তারা প্রায় সময়ই চিন্তা-ভাবনা করে।


বয়োঃসন্ধিকাল কম বেশি সব ছেলে মেয়ের উপর প্রভাব ফেলে।কিন্তু আবার কখনও কারোর ক্ষেত্রে এই প্রভাব ভয়াবহ হতে পারে।আর তখন শরীর ও মনে অনেক রকম পরিবর্তন আসে,আর বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা দেয়।
এই সময় ছেলে মেয়েদের মনে আসে অভিমান,আশা এবং নানা ধরণের প্রশ্ন।এই সময় বাবা মায়ের উচিত সন্তানের সাথে বন্ধুর মতো আচরণ করা, তাদের সমস্যার কথা জানতে চাওয়া, এবং তাদের সচেতন করা।কিন্তু সন্তারা সহজে বড়দের সাথে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চায় না। মনের কথা চেপে রেখে অনেকে ডিপ্রেশনে চলে যায়।এতে তার রাগ বেরে যায়।বদ মেজাজি হয়ে যাওয়ায় তাড়া সবার সাথে তর্কে জড়ায়।আবার কখনও তা মারামারির পর্যায়ে ও চলে যায়।ফোনের প্রতি আসক্ত হয়ে যায়,কেউ কেউ খারাপ সঙ্গে পরে নেশাসক্ত হয়ে পড়ে। মিথ্যা বলতে শুরু করে। বাবা-মা বা গুরুজনদের বলা ভালো কথা তাদের অসহ্য লাগে। এই অসহ্য লাগার কারণে রাগের মাথায় যা তা বলে দিতে পারে। কিন্তু অভিভাবকদের উচিত উল্টা রাগ না করে বাচ্চাদের ঠান্ডা মাথায় বুঝানো। তা না হলে এরা খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। এই বয়সের ছেলেমেয়েরা খুবই আবেগ প্রবণ হয় তাই অভিভাবক দের সচেতন হতে হবে।

বয়োঃসন্ধিকালে মেয়েদের পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। অবশ্যই তাদের খাবারে আয়রন,ক্যালসিয়াম,ফোলেট থাকতে হবে,সাথে আমিষ,নানা ধরণের সাস্থকর খাবার, সবজি, ফল এইগুলা বেশি বেশি খেতে হবে। পিরিয়ড বয়োঃসন্ধিকালিন সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, পিরিয়ড চলাকালিন প্রতি মাসে মেয়েদের নির্দিষ্ট পরিমাণে ব্লাড বের হয়ে যায়,তার ঘাটতি পুরন করতে পুষ্টিকর খাবার,আয়রন যুক্ত খাবার বেশি বেশি খেতে হবে।
পিরিয়ড চলাকালিন সময়ে মেয়েদের খুব সাবধানতা অবলম্বন করে চলতে হবে।যেমন-

ভারি কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে, লাফিয়ে খেলা ধুলা করা যাবে না, পেটে আঘাত লাগানো যাবে না।
এসময় কিছু খাবার ও নিষিদ্ধ আছে যেইগুলা পিরিয়ড এর সময় খেলে নানা ধরণের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন-শশা,বেশি ঠান্ডা পানি পান করা যাবে না।এই সময় শরীরে যত্ন নিতে হবে। আর বাবা মায়ের খেয়াল রাখতে হবে যাতে তাদের বাচ্চারা কোনো কিছু নিয়ে ভয় না পেয়ে তাদের সাথে শেয়ার করে এতে তাদের মনে উপরে খারাপ প্রভাব পরবে না।


মন্তব্যঃ

এই আর্টিকেলে মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল সময়ে শারীরিক পরিবর্তন, বিভিন্ন সমস্যা ও তার সমাধান নিয়ে তথ্য শেয়ার করেছি। আপনার কাছে যদি তথ্যটি ইন্টারেস্টিং মনে হয় তাহলে আপনি আপনার বন্ধুদের কাছে শেয়ার করতে পারেন। এরকম আরো ইন্টারেস্টিং তথ্য জানতে আমাদের পাশে থাকুন। এবং বিভিন্ন বিষয়ে আরো জানতে ভিজিট করুন www.rupokit.com । আমাদের এই পোস্টের মধ্যে যদি কোন ভুল থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে আপনার গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যটি জানাবেন। যেন আপনার মন্তব্যটির ফলে আমাদের ভুলগুলো সংশোধন করতে পারি।