চোখের বিভিন্ন রোগ ও তার প্রতিকার:-


Topic:-


1.চোখ উঠলে করণীয় কি?

2.চোখে অঞ্জন কতদিন থাকে এবং  অঞ্জনি হওয়ার কারণ।

3.চোখের ছানি দূর করার ঘরোয়া উপায়।

4.গ্লোকমা রোগ কেন হয়?

5.গ্লোকমা প্রতিরোধের উপায়।

6.চোখে ঝাপসা দেখার কারণ।

7.চোখের ঝাপসা দূর করার উপায়।

8.আই ফ্লোটার্স কেন হয়?

9.ট্যারা চোখ ভালো করার উপায়।


মানুষের পাঁচটি  ইন্দ্রিয়র মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে চোখ। চোখ আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং জটিল অঙ্গ। তাই আমাদের চোখে সুস্থ রাখা অত্যন্ত জরুরি। চোখের নিয়মিত যত্ন না নিলে আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হারিয়ে ফেলতে পারে। চোখে যত্ন নেওয়ার জন্য চোখে কি কি সমস্যা হয়ে থাকে সেগুলো সম্পর্কে ধারণা রাখা উচিত। সাধারণত আমাদের চোখের  সাতটি সমস্যা হয়ে থাকে। চলুন জেনে নেই চক্ষু বিশেষকরা এই শাস্তি সমস্যা নিয়ে কি বলেছেনঃ

চোখ ওঠা-

চোখ যদি লাল হয়ে যায়, চুলকায়, জ্বালাপোড়া করে, খসখস করে এবং বারবার ময়লা জমে তাহলে এটা চোখ ওঠা লক্ষণ।  সাধারণত  চোখে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে এমনকি ধুলাব বা রেনুর এলার্জি থেকে চোখ উঠতে পারে। আবার অনেকে জীবন থেকে বাঁচার জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে  থাকি, এন্ড সেন্টারে যাওয়ার ভুলবশত চোখে  গেলেও চোখে সমস্যা হতে পারে। চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডঃ সিদ্দিকুর রহমান বলেছেন, চোখ উঠলে পরিষ্কার  পানিতে তুলো ভিজিয়ে আক্রান্ত চোখ বারবার  পরিষ্কার করতে হবে। এক চোখের তোল আরেক চোখে স্পর্শ করবেন না। চোখ ওঠা একটি ছোঁয়াচে রোগ,  সুতরাং অন্যদের থেকে আলাদা  থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন ডঃ সিদ্দিকুর রহমান। তবে টানা ২-৩ দিনেও চোখ ভালো না হলে বিশেষকদের কাছে পরামর্শ নিবেন।




অঞ্জনি-

আমাদের চোখের উপরে বা নিচে গোটা গোটা কিছু বার হতে দেখা যায়। এটিকে অঞ্জনি বলা হয়। চোখের উপরে বা নিচে পাতায় গোটার মত দেখা দিলে সেটাকে অঞ্জনি বলে। চোখে অঞ্জনি বের হলে চোখ ফুলে যায় এবং চোখে ব্যথা অনুভব হয়।  বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, দিনে কয়েকবার গরম পানি দেয় তুলো ভিজিয়ে চোখ বারবার মুছতে  থাকলে ধীরে ধীরে ফোলা কমে যাবে। এমতাবস্থায় চোখ জ্বালাপোড়া করে না এমন শ্যাম্পু বা সাবান ব্যবহার করতে বলেছেন ডঃ রহমান। সাধারণত চোখের অঞ্জনে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। এ সময়ের মধ্যে ভালো না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ  নিতে হবে।



ছানি-

চোখের সাধারণ এবং জটিল সমস্যার মধ্যে একটি হল চোখে ছানি পড়া। ছানি পড়লে চোখের লেন্স বা পর্দায় সাদা সাদা আবরণ পরে। ফলে চোখের আলো প্রবেশের বাধা সৃষ্টি হয়। এতে চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হতে হতে  দৃষ্টি চলে যেতেও পারে। সাধারণত বয়স্কদের এই রোগ হয়,তবে শিশু বা তরুণরাও আক্রান্ত হতে পারে। এক্ষেত্রে সমাধান একটাই অপারেশন। ঘোলা লেন্স সরিয়ে পরিষ্কার লেন্স বসালে চোখ সম্পূর্ণ ঠিক হয়ে যায়। এবং  রোগী আগের মত সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে দেখতে পারে। বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন:)




গ্লোকমা-

সাধারণত চোখের ভেতরে অতিরিক্ত চাপ বা পেশার পরে বা চোখে বড় ধরনের আঘাত লাগে, তাহলে চোখের স্নায়ুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।  এমনটি হলে কোন  রোগী তার দৃষ্টিশক্তি চিরতরে হারাতে পারেন। চোখের এই অতিরিক্ত  চাপ বা পেশার কমে যাওয়াকে গ্লোকমা বলে। কোন কোন রোগীর গ্লোকমা লক্ষণ নাও দেখা যেতে পারে! গ্লোকমার কোন লক্ষণ না থাকাই একে নিরবঘাতক বলে। কারণ গ্লোকমা হলে চোখের দৃষ্টি  পূর্বের অবস্থায় ফেরানো যায় না। চিকিৎসার মাধ্যমে যতটুকু দৃষ্টি আছে সেটাই রক্ষা করা  যায়। প্রাথমিক অবস্থায় এ রোগ ধরা পড়লে ওষুধ ও ড্রপের মাধ্যমে ঠিক করা সম্ভব।  পরিস্থিতি গুরুতরো পর্যায়ে গেলে অপারেশনই একমাত্র সমাধান।


ঝাপসা দৃষ্টি-

আপনি যদি কাছের বস্তু অথবা দূরের বস্তু ঝাপসা দেখেন, তাহলে চিকিৎসকের  থেকে পরীক্ষা করিয়ে নিন। যদি চশার প্রয়োজন হয় তাহলে ভালো দোকানে  কাছে থেকে বানিয়ে চিকিৎসকের  থেকে  পরীক্ষা  করিয়ে নিন। অনেকেই চশমা পরিবর্তে কন্টাকলেন্স ব্যবহার করতে চান। আপনি যদি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে ভালো মানের লেন্স ব্যবহার করতে পারেন তাহলেই লেন্স পড়বেন। ভালো জায়গায়, যেখানে ধুলাবালি কম থাকবে সেখানে লেন্স করার চেষ্টা করবেন। এছাড়াও লেন্স পরা অবস্থায় গোসল করবেন না, ঘুমাবেন না, গরম কোন কিছু ধরা বা কাছে চাওয়া যাবেনা। অন্যের লেন্স এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ লেন্স ব্যবহার থেকে দূরে থাকুন।

ফ্লোটার্স-

আপনার ফ্লোটার্স আছে কিনা সেটা বুঝতে কোন উজ্জ্বল পৃষ্ঠে তাকে থাকুন। যেমন মেঘ মুক্ত নীল আকাশ। তখন যদি বিন্দুর মতো ভাসমান কিছু কিংবা ছেঁড়া সুতোর মতো কিছু দেখতে পান তাহলে সেটাই ফ্লোটার্স। আপনার চোখ যেদিকে সরাবেন সেটি ফ্লোটার্স সরতে থাকবে। তবে এগুলো ক্ষতিকর কিছু না। যদি হঠাৎ করে অনেকগুলো ফ্লোটার্স দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।



টেরা চোখ-

কোন একটি বা দুটি চোখের মনি পাশে সরে যায় তাহলে তাকে আমরা টের চোখ বলি। ট্যারা চোখের দৃষ্টি চলে যাক থাকে তাহলে চশমা, ওষুধ বা ব্যায়ামের মাধ্যমে আগে   দৃষ্টি ঠিক করা হয় এরপর চোখের পরিস্থিতি বুঝে টেরা চোখ সোজা করে থাকেন বিশেষজ্ঞরা




চোখের  যত্নে  পাঁচটি অভ্যাস-

নিয়মিত ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমান। এছাড়া কাছে ফাঁকে চোখ কে বিশ্রাম দিন। এজন্য টুয়েন্টি টোয়েন্টি সূত্র মানতে পারেন। যেমন কাজের সময় ২০ মিনিট বেরোতিতে ২০  ফুট দূরের বস্তুতে ২০ সেকেন্ড ধরে তাকিয়ে থাকুন। চোখের খাবার হল ভিটামিন A,C  এবং ওমেগা থ্রি  ফ্যাটি এসিড। তাই নিয়মিত রঙিন সবজি এবং ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন।


মন্তব্যঃ

এই আর্টিকেলে আমাদের চোখের সাধারণ কিছু রোগ এবং তার লক্ষণ নিয়ে তথ্য শেয়ার করেছি। আপনার কাছে যদি তথ্যটি ইন্টারেস্টিং মনে হয় তাহলে আপনি আপনার বন্ধুদের কাছে শেয়ার করতে পারেন। এরকম আরো ইন্টারেস্টিং তথ্য জানতে আমাদের পাশে থাকুন। এবং বিভিন্ন বিষয়ে আরো জানতে ভিজিট করুন www.rupokit.com । আমাদের এই পোস্টের মধ্যে যদি কোন ভুল থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে আপনার গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যটি জানাবেন। যেন আপনার মন্তব্যটির ফলে আমাদের ভুলগুলো সংশোধন করতে পারি।